২০২০ সালে, লকডাউনের সময়টায় আমার সবচেয়ে বড় বন্দিত্ব ছিল ১৭ বছরের টাইপ ২ ডায়াবেটিস। প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ ইউনিট ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে হতো শুধু ব্লাড সুগার কন্ট্রোলে রাখার জন্য। এক সময় এমন অবস্থা হলো যে আমার হাত, পেট, উরু — কোথাও আর ইনজেকশন দেওয়ার জায়গা ছিল না। শরীর ভেঙে যাচ্ছিল, আমিও ভেতরে ভেতরে শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম।
এই বিশাল ইনসুলিনের পরও ব্লাড সুগার কমছিল না। ঠিকমতো খেতে পারতাম না, শরীরে কোনো শক্তি থাকত না, চেয়ার থেকে উঠতে বা ওয়াশরুমে বসতে পর্যন্ত কষ্ট হতো। মনে হতো আর কিছুই করার নেই — সেই হতাশার মধ্যে আমি প্রথমবার মিস্টার খান-এর সাথে দেখা করি।
প্রথম কথোপকথনেই তিনি আমাকে ডায়াবেটিস আর ইনসুলিনের আসল গল্পটা বুঝিয়ে দিলেন — যা আমি এত বছরেও আর কারো কাছ থেকে শুনিনি। উনি শুধু আরেকটা চার্ট দেননি — উনি ধাপে ধাপে আমাকে গাইড করেছেন, কীভাবে পরিবর্তনগুলো বুঝতে হবে আর বাস্তবে কাজে লাগাতে হবে, সেটাও দেখিয়েছেন।
প্রথম সপ্তাহ থেকেই ছোট হলেও স্পষ্ট পরিবর্তন টের পেয়েছিলাম। সপ্তাহের পর সপ্তাহ আমার শরীর শক্তি ফিরে পেতে শুরু করল, খাবারের তালিকা সহজ হলো, শরীর ধীরে ধীরে আগের মতো ফিট হতে শুরু করল।
ছয় মাসের মাথায় আমি পুরোপুরি ইনসুলিন মুক্ত — আর আজও এক ফোঁটা ইনসুলিন ছাড়াই বাঁচছি। আমি জীবন্ত প্রমাণ যে সঠিক গাইড আর সঠিক সাপোর্ট থাকলে বাস্তব পরিবর্তন সম্ভব।
“আমার কিডনির eGFR খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল — স্বাভাবিক ৯০+ থাকার কথা থাকলেও সেটা নেমে প্রায় ৩০-এ পৌঁছেছিল।
আমি যখন প্রথম মিস্টার খান-এর সাথে টরন্টো অফিসে বসি, উনি আমাকে তাড়াহুড়ো করেননি বা কোনো জেনেরিক প্ল্যান হাতে ধরিয়ে দেননি।
উনি মন দিয়ে আমার কথা শুনেছেন, প্রয়োজনীয় প্রশ্নগুলো করেছেন এবং তারপর বলেছিলেন, ‘দুই সপ্তাহ সময় দিন — আমি আপনার কিডনির জন্য বিশেষভাবে তৈরি একটি ফুড চার্ট তৈরি করব, যা প্রাকৃতিকভাবে কিডনির কার্যক্ষমতা ফেরাতে সাহায্য করবে।’
আমি খুবই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম — আমি আজীবন ডায়ালাইসিসে যেতে চাইনি। তাই আমি তার দেওয়া ফুড চার্ট একদম নিয়ম মেনে ফলো করেছি, পুরোপুরি মনোযোগ দিয়ে।
মাত্র এক মাসের মধ্যেই আমি এমন পরিবর্তন দেখতে পাই, যা আগে কখনোই দেখিনি — কোনো ব্যয়বহুল ওষুধ নয়, কোনো জটিল চিকিৎসা নয় — শুধু মিস্টার খান-এর ঠিকমতো বানানো ফুড আর লাইফস্টাইল প্ল্যান।
আমি নিরবচ্ছিন্নভাবে সেটি অনুসরণ করে গিয়েছি। ছয় মাসের মধ্যে আমার eGFR আবার স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে আসে — ৯২ এরও বেশি। আমার ফ্যামিলি ডাক্তার অবাক হয়ে গিয়েছিলেন — উনি সরাসরি জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘এটা কীভাবে সম্ভব?’
আজ অবধি আমি কিডনি সমস্যার জন্য কোনো ওষুধ নিইনি। সবই সম্ভব হয়েছে মিস্টার খান-এর অনন্য, খাবার-কেন্দ্রিক পদ্ধতির কারণে।
যখন আমার মনে হয়েছিল ডায়ালাইসিস ছাড়া আর কোনো রাস্তা নেই, মিস্টার খান-এর প্ল্যানই আমাকে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে এনেছে।
মিস্টার খানের সাথে আমার যাত্রার শুরুটা সহজ ছিল না — সত্যি বলতে এটা আমার জন্য একটা বড় শিক্ষা ছিল।
টানা দুই বছর ধরে উনি আমাকে ধরার চেষ্টা করছিলেন — শুধু যেন আমাকে বুঝিয়ে বলতে পারেন যে আমার আসল সমস্যাটা ঠিক কী। কিন্তু টরন্টোর ব্যস্ত জীবনের মতোই আমি সবসময় ব্যস্ত ছিলাম — পরিবার, কাজ, ব্যবসা সব সামলাতে গিয়ে নিজের শরীরের দিকে আর তাকানোর সময়ই পাইনি, অথচ আমার অজান্তেই অযথা ইনসুলিন আর নিয়ন্ত্রণহীন ব্লাড সুগার আমার শরীরের ক্ষতি করছিল।
সেই সময় আমি পায়ের গ্যাংগ্রিন নিয়ে ভয়ানক এক সমস্যার মধ্যে ছিলাম, অথচ আমার ফ্যামিলি ডাক্তার কখনোই এটার আসল কারণটা স্পষ্ট করে বোঝাননি — শুধু আরও ওষুধ আর ইনসুলিন লিখে দিতেন।
অবশেষে, যখন আমি মিস্টার খানের টরন্টো অফিসে গিয়ে বসলাম, উনি যথারীতি সময় নিয়ে, ধাপে ধাপে, এমনভাবে সব ব্যাখ্যা করলেন — যা আগে আর কেউ কখনো বলেনি। প্রথমবারের মতো আমি বুঝতে পারলাম আমার শরীরে আসলে কী ঘটছে — আর কীভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে আমরা এটা ঠিক করতে পারি।
মিস্টার খানের সাথে কাজ করা মানে শুধু আরেকটা ফুড চার্ট হাতে পাওয়া নয়। উনি নিজে আমার অগ্রগতি মনিটর করেছেন, নিয়মিত খোঁজ নিয়েছেন — আর এই মনোযোগই আমাকে যে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে, সেটা আগে কখনো পাইনি।
মাত্র ছয় মাসেই আমি ধীরে ধীরে ইনসুলিন আর অন্য ওষুধ কমাতে পেরেছি। আগের চেয়ে শক্তি পেয়েছি, এনার্জি পেয়েছি, আর অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছি আমার নিজের জীবনের ওপর।
এখনো পর্যন্ত আমি তার দেওয়া ফুড প্ল্যান আর লাইফস্টাইলই মেনে চলি। আর যখনই ছোটখাটো কোনো প্রশ্ন বা সমস্যা হয়, আমি সরাসরি মিস্টার খানকে ফোন করি — আর তিনি সবসময় সময়মতো উত্তর দেন, কোনো এক্সট্রা ফি ছাড়া। এই নিঃস্বার্থ সাপোর্ট আর যত্নই তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলেছে— আর এ কারণেই আমি নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে ওনার ওপর পুরোপুরি ভরসা করি।